পাকিস্তানে থাকা অনথিভুক্ত শরণার্থীদের থেকে ৮৩০ ডলার করে জরিমানা নিচ্ছে দেশটির সরকার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৯১ হাজার টাকারও বেশি। দেশটিতে যারা ভিসা ছাড়া অবস্থান করছেন, দেশত্যাগের সময় তাদের কাছ থেকে এ জরিমানা নেওয়া হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে সব আশ্রয়প্রার্থী আফগান শরণার্থীদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় পাকিস্তান। দেশে ফিরে যাওয়ার সরকারি সময়সীমা শেষ হয় ১ নভেম্বর। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ১৪ লাখ আফগান নিবন্ধিত শরণার্থী হিসেবে পাকিস্তানে অবস্থান করছে আর ৮ লাখ ৮০ হাজার মানুষ বৈধভাবে থাকার অনুমতি পেয়েছে। তবে আরও ১৭ লাখ মানুষ দেশটিতে অবৈধভাবে বসবাস করছে। এখনও শরণার্থীর স্বীকৃতি পায়নি তারা।

পাকিস্তানে অবৈধভাবে বসবাসরত বিদেশিদের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী অভিযান চলছে। দেড় লক্ষাধিক আফগান শরণার্থী পালিয়েও গেছে, কেউ কেউ বাধ্য হয়ে ফিরে গেছেন দেশে। এর মধ্যে মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। তবে এজন্য তাদের গুণতে হচ্ছে ৮৩০ ডলার।

পাকিস্তানে আশ্রয় নেওয়া এসব শরণার্থীর বেশিরভাগই আফগানিস্তানের নাগরিক। ২০২১ সালে তালেবান সরকার পুনরায় আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করলে তারা পাকিস্তানে পালিয়ে আসেন। যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তাদেরও এ ফি দিতে হবে। তবে যারা আফগানিস্তানে ফিরে যাচ্ছেন তারা এ জরিমানার আওতামুক্ত থাকবেন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর মতে, কাবুলের শাসনভার তালেবানের হাতে যাওয়ার পর পাকিস্তানে আসা অনেক আফগান নাগরিক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেতে বিলম্বের সম্মুখীন হয়েছে।

পাকিস্তান রিফিউজি কনভেনশনের অংশ নয়। ফলে তারা তাদের সীমান্তে বসবাসকারী আফগানদের কাউকে শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশের অভিবাসন আইনের মতো পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী যারা ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবস্থান করেছে কিংবা অভিবাসন আইন লঙ্ঘন করেছে সেসব শরণার্থীদের জরিমানা ও শাস্তি দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান যে জরিমানা আরোপ করেছে বা করবে তা আমাদের আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’